সরকারের কাছে কিট হস্তান্তর করতে পারেনি গণস্বাস্থ্য
করোনা শনাক্তে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উৎপাদিত কিট সংগ্রহ করেনি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে না পারলেও গণস্বাস্থ্যের কিটের নমুনা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর প্রিভেনশন-সিডিসির প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে অধিদপ্তর বলছে, গণস্বাস্থ্যের উৎপাদিত কিট এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়ায় গবেষণা সমাপ্ত না করে তারা এই কিট কাউকেই হস্তান্তর করতে পারে না।
সারা বিশ্বেই সংকট রয়েছে করোনা'র কিটের। আবার যাও বা আছে সেসব কিটে শতভাগ সঠিক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ-বিস্তর।
বিশ্বে করোনার দাপটের শুরু থেকেই কিট তৈরির চেষ্টা করে আসছে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র। শনিবার (২৫ এপ্রিল) সরকারের কাছে সেই কিট হস্তান্তরের ঘোষণা দেয় গণস্বাস্থ্য। তাদের দাবি, তারা শতাধিক ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে উদ্ভাবিত কিটে সঠিক ফল পেয়েছেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ওষুধ প্রশাসনের তারা বলেছেন, তারা আজকে আসতে পারবেন না। মন্ত্রীকেও অনুরোধ করেছি, তবে কোনো উত্তর পাইনি। আর্মি প্যাথলোজি ল্যাবরোটরিতেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তবে অনুমতি পাননি বলে আসতে পারবেন না। বিএমআরসির চেয়ারম্যান ফোন করে জানিয়েছেন তিনি অসুস্থ।
কিন্তু আয়োজিত অনুষ্ঠানে সরকার তরফের কোনো সংস্থা বা ব্যক্তি কেউই উপস্থিত ছিলেন না। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে কাজ করছে না গণস্বাস্থ্য।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা বলেছি যখন অ্যাপ্রুভ হবে তখন আপনারা বড় করে অনুষ্ঠান করবেন, করা যাবে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এখন তো এটা স্বীকৃত কোনো কিট না যে আপনারা হস্তান্তর করবেন। এখন ট্রায়েল পর্যায়ে আছে। এটা কি এভাবে হস্তান্তর করা যায়? আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম, এটি করা সমীচীন হবে না। এটি করবেন না।
বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, কিট বা এমন কোনো উপকরণ তৈরির পর তা ব্যবহারের আগে তৃতীয় কোনো পক্ষ বা থার্ড পার্টিকে দিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়। বাংলাদেশে আইসিডিডিআরবি ও আইইডিসিআরসহ এমন ন'টি থার্ড পার্টি রয়েছে। এছাড়াও সরকারের তরফে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্স কাউন্সিল বিএমআরসি, ন্যাশনাল রিসার্স এথিক্স কমিটি বা এনআরইসিসহ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর হয়ে অনুমোদিত হবার পরই তা জনসম্মুখে আনার বিধান রয়েছে।
বিএসএমএমইউ লিডার বিভাগ চেয়ারম্যান ডা. মামুন বলেন, উনি নাকি বিদেশ থেকে স্যাম্পল নিয়ে এসে পরীক্ষা করে দেখেছেন তার কিট কাজ করেছে। তিনি কার পারমিশনে এরকম হাইলি ইনফেকশন স্যাম্পল বাংলাদেশে ঢুকিয়েছে। তিনি দেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। সে কারণে তাকে আইনের আওতায় বিচার করার যায় কিনা সেটা দেখতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কিট তৈরি অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। তবে সেটি করতে গিয়ে জনস্বাস্থ্য হুমকিতে ফেললে তা হিতে বিপরীত হবার শঙ্কাই বেশি।